কারবালার ঘটনার পরবর্তি সময়ে ইয়াজিদের শাসনামল।

 



📝সাজ্জাদ।


বিষয়:-কারবালার ঘটনার পরবর্তি সময়ে ইয়াজিদের শাসনামল। (সকল বর্ননা আহলে সুন্নাত এর গ্রন্থ হতে)


 সাফিনা (রা:) বনু উমাইয়া সম্পর্কে বলেছিলেন, "বানু উমাইয়াদের শাসনকালের রাজত্ব ছিল সবচেয়ে নিকৃষ্ট/দুষ্ট রাজত্বগুলোর একটি।" (জামে তিরমিজি হাদিস: ২২২৬)


নোট: যখন মু'আবিয়া মারওয়ানের মাধ্যমে ইয়াজিদের জন্য সাহাবাদের কাছ থেকে আনুগত্যের অঙ্গীকার চান, তখন  আবদুর রহমান বিন আবু বকর (রা)  এর বিরোধিতা করেন (সহীহ বুখারী হাদিস: ৪৮২৭)।


💥ইয়াজিদের শাসনামলের ১ম বছর কারবালা সংঘটিত হয়।ইমাম হুসাইন (রা:)কে হত্যা করে ইয়াজিদি সেনা ওনার কাটা মাথা হাজির করার পরেও হত্যাকারিদের ইয়াজিদ কোন শাস্তি দেয় নি।অর্থাৎ ইয়াজিদ নিজেও এগুলোর মাঝে জড়িত।


ইমাম হুসাইন(রা:) কে হত্যার ফলে মক্কা ও মদিনার মানুষ ইয়াজিদের বায়াত ভেঙ্গে দেয়।এজন্য ইয়াজিদ সেনা পাঠায় মক্কা-মদিনা দখলের জন্য।ইয়াজিদের শাসনামলের ১ম বছরের কাহিনী আমি আমার আগের লেখাগুলোতে আলোচনা করেছি।আমার ব্লগে আছে।


💥 ইয়াজিদের শাসনামলের ২য় বছর মদিনা আক্রমণ(হাররার ঘটনা)।


💥ইয়াজিদের শাসনামলের ৩য় বছর মক্কা আক্রমণ।

ইয়াজিদ সেনা মক্কা আক্রমণের বছর কামান দিয়ে আগুন লাগায়। সাহাবী আব্দুল্লাহ বিন জুবায়েরের (রা:)সহ তার সঙ্গীদের মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে করে।এই বছর ইয়াজিদ হঠাৎ মারা যায়।====>>


১)হাররার ঘটনার মাধ্যমে মদিনা মুনাওয়ারার পবিত্রতা লঙ্ঘন করা এবং গণহত্যা চালানো, যার ফলে সকল, তার ফেরেশতারা এবং সমস্ত মানবজাতির অভিশাপ বয়ে এসেছে।


(সহিহ বুখারী, হাদিস: ২৬০৪-২৯৫৯-৪০২৪ এবং ৪৯০৬, সহিহ মুসলিম হাদিস: ৩৩৩৯, ৩৩১৯, ৩৩২৩, ৩৩৩৩)


২) ইমাম আহমদ বিন হাম্বল তার ছাত্রকে ইয়াজিদ বিন মুআবিয়াহ সম্পর্কে বলেছিলেন, "তিনি সেই ব্যক্তি যিনি মদিনার অধিবাসীদের সাথে যা করেছিলেন। সেটা কী ছিল?" ছাত্র জিজ্ঞেস করলেন। তিনি উত্তর দিলেন, "তিনি মদিনাকে লুট করেছিলেন।" ছাত্র জিজ্ঞেস করলেন, "তিনি ইয়াজিদকে এই হাদিসটি বর্ণনা করতে পারেন?" তিনি আল্লাহ উত্তরে বললেন, "না। ইয়াজিদকে এই হাদিস বর্ণনা করা যাবে না এবং কেউ ইয়াজিদকে হাদিস বর্ণনা করতে পারবে না।" ছাত্র জিজ্ঞেস করলেন, "তিনি (ইয়াজিদ) যখন এই অপরাধটি করেছিলেন, তখন তার সাথে কে ছিল?" তিনি উত্তর দিলেন, "সিরিয়ার লোকজন।" (আল রদ আলা আল মুতাসিব আল আনিদ পৃষ্ঠা নম্বর ৪০ এবং এর সনদ (বর্ণনাকারীরা) সঠিক।)


৩)যখন ইমাম হুসাইন (রা.) শহীদ হন, তার মাথা ওবায়দুল্লাহ বিন জিয়াদের সামনে আনা হয়েছিল। ইয়াজিদ বিন মুআবিয়াহর প্রিয় গভর্নর, সেই পাপি মানুষটি তার হাতে থাকা লাঠি দিয়ে এটি আঁচড়াতে শুরু করে। এই ভয়ানক দৃশ্য দেখে, হযরত আনাস বিন মালিক (রা.) বললেন, "আল্লাহর কসম, হুসাইন ছিলেন প্রিয় নবীর সাথে চেহারা এবং অবয়বে সবচেয়ে বেশি মিল।" (সহিহ বুখারী হাদিস নং ৩৭৪৮, জামি তিরমিজি হাদিস: ৩৭৭৮) 


  [ এই হাদিসে ইমাম বুখারি ইমাম হুসাইন এর সম্মানে (আ:) বলেছেন।নবী ও ফেরশতা ছাড়াও অনেক সম্মানিত মানুষদের ও (আ:) বলা যায়েজ ও উত্তম।ইমাম হুসাইন এর সম্মান রাসুল(সা:) এর কাছে অনেক বেশী। যদিও মানুষেরা সেই সম্মান দিতে জানে নি।এই মহান নিরাপরাধ মানুষটির গলা কাটল দুনিয়াবী স্বার্থের লোভে পড়ে ] 


৪)কারবালার ঘটনার পর তার গভর্নর ওবায়দুল্লাহ বিন জিয়াদ কে শাস্তি না দেওয়ার কারণে, ইয়াজিদ একই অপরাধ করেছে।


(সহিহ মুসলিম হাদিস নং ৬৩০৯)


৫) "আমি শপথ করি যার হাতে আমার প্রাণ আছে, 'যে আমাদের (নবী পরিবারের) প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করবে তাকে অবশ্যই জাহান্নামে রাখা হবে, যদিও সে হাজরে আসওয়াদ এবং মাকামে ইব্রাহিমের মধ্যে নামাজ পড়ে এবং রোজা রেখে মারা যায়।'" (আল মুস্তাদরাক লিল হাকিম হাদিস নং ৪৭১৭ এবং ৪৭১২)


৬)সহিহ বুখারী এবং সহিহ মুসলিমের হাদিসের একজন খুব গুরুত্বপূর্ণ বর্ণনাকারী এবং বিখ্যাত পণ্ডিত ইব্রাহিমের উপদেশ: নাখাই, তাবায়ী রহমতুল্লাহ বলেন: "যদি (ধরা যাক) আমি সেই লোকদের মধ্যে থাকতাম যারা সাইয়্যেদনা হুসাইন (রা.) কে হত্যা করেছিল এবং আমি (বিচারের দিন) ক্ষমা পেয়েছিলাম এবং জান্নাতে প্রবেশ করতাম (জান্নাতে) তবে আমি লজ্জিত হতাম/অপমানিত হতাম (প্রিয় নবী যদি আমাকে দেখতেন) যে আমি পৃথিবীতে হুসাইনের হত্যাকারীদের সমর্থক ছিলাম।" (আল মুআজাম আল কাবির লিততাবরানি: হাদিস নং ২৮২৯-১১২/৩)





Comments

Popular posts from this blog

আজকের বিষয়:- খারেজ্বীদের উৎপত্তি এবং এর অন্তিম পরিণতি হযরত আলী(রা:) কে হত্যা

সিফফিনের যুদ্ধ।

আহলে বায়াতের মর্যাদা