সিফফিনের যুদ্ধ।

  




আজকের বিষয়:- হযরত আলী রা: এবং মুয়াবিয়ার মাঝে ঘটা সিফফিনের যুদ্ধ।

হাদীসের সংকলনঃ-খেলাফতে রাশিদা পতনের পেছনের
কারণ(৬ষ্ঠ পর্ব)

লেখকঃ-শহীদুল ইসলাম সাজ্জাদ।

জামাল যুদ্ধের পরেও সমস্যা শেষ হলো না।আলী রাঃ প্রত্যেকটা গভর্নরদের চিঠি লিখে জানালেন তাদের ক্ষমতা থেকে ইস্তফা নিতে।আবার নতুন ভাবে সবকিছু নির্বাচিত হবে।সবাই নিলেন কিন্তু মুয়াবিয়া সরাসরি অস্বীকার করল।
মুয়াবিয়া বলেছিলেন যে আমি ওসমান হত্যার কিসাস(বদলা) চাই।এর উত্তরে আলী রা: বলেছিলেন যে ওসমান রাঃ এ হত্যার বিচার উনি করবেন।আগে বায়াত হন।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রিত হলে অবশ্যই ওসমান রাঃ এর হত্যাকারীদের শাস্তি হিসেবে তাদের ও হত্যা করা হবে।
[Note:-ইসলামের রীতি অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় অপরাধের বিচার শুধুমাত্র খলিফা করতে পারবেন।আর সবাই যদি খলিফাকে খলিফা হিসেবে স্বীকৃতি দেন তবেই তো উনি খলিফা।আলী(রা:)কে হঠাৎ সবাই মিলে খলিফা বানান।তাই তাকে খলিফা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া অনেকের বাকী ছিল।উনিও চাচ্ছিলেন ওসমান (রা:) হত্যার বিচার করবেন।কিন্তু যারা এর কিসাস(হত্যার বিচার হত্যা) চাচ্ছেন তারা যদি আলী (রা:) এর হাতে বায়াত নিয়ে খলিফা হিসবেই স্বীকৃতি না দেন,তবে উনি কিভাবে বিচার করবেন?উনি রাষ্টপ্রধান হিসেবে স্বীকৃতি না পেলে তো বিচারকার্য সম্পন্ন করতে পারবেন না।এটাই ইসলামের আইন।আর দ্বিতীয়ত ওসমান রা: এর হত্যার পর পরিস্থিতি অশান্ত ছিল।তাই উনি সময় চেয়েছিলেন যাতে তদান্ত করতে পারেন।আলী(রা:) এর সিদ্ধান্তই যুক্তিযুক্ত ]
আমিরে শাম মুয়াবিয়া বলে উঠল না! তরোয়ালের বিচার তরোয়ালে হবে।উনি বায়াত না নিয়ে অযথাই বিদ্রোহ করেন। মুয়াবিয়া বাহিনী সিরিয়ায় ইউফ্রেটিস নদীর তীরে সিফফিনের ময়দানে জড়ো হলো।আর বললেন উনি আলী রা: এর হাতে বায়াত হবেন না।উল্টো তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চান।
কোনভাবেই যখন মুয়াবিয়াকে বোঝানো গেল না তখন আলী (রা:)বাধ্য হয়ে তার ও সৈন্যকে প্রস্তুত করে যুদ্ধ শুরু করেন।শুরু হলো ভয়াবহ যুদ্ধ।এই যুদ্ধে অসংখ্য সাহাবী মারা যান।মাসের পর মাস ধরে এই যুদ্ধ হয়েছে।
যুদ্ধের মাঝে আল্লাহর নবীর প্রিয় সাহাবি আম্মার বিন ইয়াসির(রা:) কে এই যুদ্ধে মুয়াবিয়া বাহিনী হত্যা করে।এমনকি আম্মার রা; নিজেই বলেছে যে কেন উনি আলী রাঃ এর পক্ষে যুদ্ধ করছে।এই হাদীস আছে মুসলিম শরীফে।কায়েস প্রশ্ন করেছে যে আপনি কেন আলী রাঃ কে সঠিক মনে করছেন?এটা কি আপনার ব্যক্তিগত মতামত নাকি রাসুলুল্লাহ সাঃ এই ব্যাপারে কিছু বলেছে?
আম্মার রাঃ উত্তর দেন যে,রাসুলুল্লাহ সাঃ ১২ মুনাফিকের নাম হুযায়ফা বিন ইয়ামান রাঃ কে বলেছিলেন।যাদের আল্লাহ কোনদিন ই মাফ করবেন না। এর মধ্যে ৮ জনের মৃত্যু হবে ফোড়াতে।(১)এই হাদীস কেন এই উত্তরে উনি বললেন?কারণ আছে।কিন্তু তা আপনাদের ভাবনার জন্য রেখে দিলাম।
আম্মার বিন ইয়াসির(রা:) আলী রাঃ এর পক্ষে লড়তে লড়তে মারা যান।আম্মার রাযিয়াল্লাহু আনহু নিহত হওয়ায় ঘটনায় মুআবিয়ার তাঁবুতেও এর প্রভাব পড়ে। আবু আব্দুর রহমান আস-সুলামি সিরিয়ার ছাউনিতে প্রবেশ করেন এবং দেখতে পান, মুআবিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহু, আমর ইবনুল আস রাযিয়াল্লাহু আনহু, আব্দুল্লাহ ইবনে আমর এবং আবুল আওয়ার আলাপে মগ্ন। তারা আম্মার রাযিয়াল্লাহু আনহুর নিহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে আলাপ করছিলেন। আম্মার (রা:) এর মৃত্যুর কথা শুনে আমর বিন আস আতংকিত হয়ে যান।
উনি দ্রুত মু'আবিয়াহ র নিকট চলে আসলেন এবং বারবার বলতে লাগলেন আমরা এই মানুষটিকে হত্যা করেছি। অথচ যার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বলেছেন,""হে আম্মার! তোমাকে বিদ্রোহীরা হত্যা করবে।তুমি ডাকবে আল্লাহর দিকে আর বিদ্রোহীরা ডাকবে জাহান্নামের দিকে।"(২)।আর রাসুলুল্লাহ (সা:) ওহী ব্যতিত নিজ থেকে কিছুই বলেন না।এটি শুনে মুআবিয়া বলেন, 'শান্ত হও। আল্লাহর কসম, তুমি স্থির নও। আমরা কি তাকে হত্যা করেছি? যারা তাকে এখানে নিয়ে এসেছে, তারাই তাকে হত্যা করেছে।
অর্থাৎ উনি মুয়াবিয়া সব দোষ উনি চালিয়ে দেয় আলী রা: এর উপর।মুয়াবিয়া বলে আমাদের কাছে তো যুদ্ধ করাতে আলিই নিয়ে এসেছে।না সে নিয়ে আসত আর না আমরা হত্যা করতাম(৩)।
এই বিষয়টা আমর বিন আস মুয়াবিয়াকে বললে অথচ মুয়াবিয়ার এই দাবী অযৌক্তিক। কেননা আমরা সহিহ হাদীও থেকে পাই যে আবুল গাদিয়া আম্মার (রা:) কে হত্যা করেছে।আর আবুল গাদিয়া মুয়াবিয়ার পক্ষ হতে লড়েছেন।মুয়াবিয়ার অযৌক্তিক দাবীর খন্ডন আগের যুগের সকল আহলে সুন্নাতের সালাফগণ করে গিয়েছেন।আমি কিছু আলেমদের মতামত নিম্নে দিয়ে দিব।
আমর বিন আস (রা:) পরবর্তীতে এই পথ থেকে সরে আসেন।মৃত্যুর আগে ওনার জীবনে করা বিভিন্ন ভুল উনি বুঝতে পারেন এবং আফসোস করেন।(৪)
কিন্তু মুয়াবিয়ার কোন আফসোস এর প্রমাণ পাওয়া যায় না।উলটো তার উগ্রতা আরো বেড়েই চলে।এর দ্বারা বোঝা যায় যে উনার এই ভুল শুধু ইজতিহাদি ছিল না।কেননা ওনার কাছে এই হাদীস পৌছে গিয়েছে যে নবিজী বলেছেলিএন বিদ্রোহীরা আম্মার(রা:) কে হত্যা করবে।আম্মার ডাকবে জান্নাতের দিকে।আর বিদ্রোহীরা জাহান্নামের দিকে। আর সে ভালোভাবেই বুঝে গিয়েছেন যে ওনার দলের লোকেরা মিলেই আম্মার(রা:) কে মেরেছে।তারপরেও সকল দোষ আলি(রা:) এর উপরে চাপানো হয়েছে।
উনি অনেক ভালো মানুষ ছিলেন কিন্তু শুধুমাত্র সিদ্ধান্তগত ভুল হয়ে গিয়েছে,এই কথা তখন পর্যন্ত বলা যেত যদি আম্মার রা: মারা না যেতেন।আম্মার রা: এর মৃত্যু দ্বারা উনি যে ভুল পথে আছেন তা পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়।কারণ ওনার কাছে উক্ত হাদীস ও পৌছেছে।কিন্তু উনি এই পথ থেকে ফিরে আসেন নি।উল্টো আলী (রা:) এর উপরে দোষ চাপিয়ে দিয়েছে।
আলী রা: কে মুয়াবিয়া ও তার দলবল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়।যে হাশরের ময়দানে এই ব্যাপারে কি হবে?আলী রা: বললেন
"আমার ও তার নিহতরা জান্নাতে যাবে এবং মু'আবিয়া ও আমার মধ্যে সেদিন ফয়সালা হবে।"(৫)
একটি হাদীস দিয়ে এই পর্ব শেষ করতে চাই।আলী(রা:) যে হক্বের পথে লড়বেন।কোরআনের তাফসীরের জন্য লড়বেন তা নবিজী সা: আগেই জানতেন।এবং আলী (রা:) বলেও দিয়েছিলেন।(৬)
মুয়াবিয়া নবিজীর জীবনের একদম শেষ পর্যায়ে গিয়ে মুসলমান হন।উমাইয়ারা ইসলামের গ্রহণের আগে থেকেই প্রচন্ড শত্রুতা করে আসছে।এমনকি ইসলাম গ্রহণের পরেও ওনার প্রচন্ড অপরাধ লক্ষ্য করা যায়।যেহুতু উনি মুসলিম হয়েছেন এবং নামমাত্র সাহাবী হয়েছেন তাই ওনাকে হাদীসে ( রা:) বলা হয়েছে।কিন্তু তাই বলে যে মুহাদ্দিসগণ ওনার অপরাধ লুকানোর চেষ্টা করেছেন এমন নয়।বরং তার জঘন্য অপরাধ ইমাম মুসলিম সরাসরি বর্ণনা করেছেন।
যেই সহিহ হাদীসগুলোর ব্যাপারে এই পর্বে আলোচনা করা হলো:--->>>>
১)কায়েস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আমি আম্মারকে বললামঃ আপনি (হযরত আলী (রাঃ)-এর পক্ষাবলম্বন করার ক্ষেত্রে যা করেছেন সে সম্পর্কে আপনার মতামত কি? এটা কি আপনার ব্যক্তিগত মতামত নাকি আপনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে প্রাপ্ত কিছু? আম্মার (রাঃ) বললেনঃ আমরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে এমন কিছু পাইনি যা সাধারণ মানুষ পায়নি, কিন্তু হুযাইফা আমাকে বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে তাঁর সাহাবীর মধ্যে বিশেষভাবে বলেছেন যে, সেখানে বারোজন মুনাফিক হবে যাদের মধ্যে আটজন জান্নাতে যাবে না, যতক্ষণ না একটি উট সুচের গর্ত দিয়ে যেতে পারবে। আলসার নিজেই যথেষ্ট হবে (মারতে)। এ পর্যন্ত চারটি সম্পর্কে, শু'বা তাদের সম্পর্কে কী বলেছিলেন তা আমার মনে নেই।(সহীহ মুসলিম:৭০৩৫)
২)ইকরিমা (রহঃ) থেকে বর্ণিত: ইবনু 'আব্বাস (রাঃ) তাকে ও 'আলী ইবনু 'আবদুল্লাহকে বলেছিলেন যে, তোমরা আবূ সা'ঈদ (রাঃ)-এর নিকট যাও এবং তার কিছু বর্ণনা শোন। অতঃপর আমরা তার নিকট গেলাম। সে সময় তিনি ও তার ভাই বাগানে পানি সেচের কাজে ছিলেন। আমাদের দেখে তিনি আসলেন এবং দু' হাঁটু বুকের সঙ্গে লাগিয়ে বসে বললেন, মসজিদে নববীর জন্য আমরা এক একটি করে ইট বহন করছিলাম। আর 'আম্মার (রাঃ) দু' দু'টি করে বহন করছিল। সে সময় নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার পাশ দিয়ে গেলেন এবং তার মাথা থেকে ধূলাবালি মুছলেন এবং বললেন, আম্মারের জন্য বড় দুঃখ হয়, বিদ্রোহী দল তাকে হত্যা করবে। সে (আম্মার) (রাঃ) তাদেরকে আল্লাহর দিকে ডাকবে এবং তারা আম্মারকে জাহান্নামের দিকে ডাকবে। [সহিহ বুখারী: ২৮১২, ৪৪৭, সহীহ মুসলিম ৭৩২০ ]
৩)কুলসুম বর্ণনা করেন যে আমরা ওয়াসিত শহরে আব্দুল আলার নিকট বসা ছিলাম। হঠাৎ আমি এক ব্যক্তি কে দেখলাম “আবুল গাযিয়াহ” নামে। তিনি পানি চাইলেন। অতপর, তার নিকট কারুকার্য খচিত রুপার পাত্রে পানি নিয়ে আসা হলে তিনি তা হতে পান করতে অসম্মতি জানান। অতঃপর তিনি আল্লাহর রসুল হতে বর্ণনা করেন, তিনি আমাদের বলেছেন: “আমার পর তোমরা কুফরের দিকে ফিরে যেও না একে অপরের
গর্দানে আঘাত করে।" আবুল গাদিয়া আরও বলেন: আমি একদা এক ব্যক্তিকে দেখলাম অমুকের নিন্দা করছে। আমি তাকে বললাম: আল্লাহর কসম! যদি আল্লাহ তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য আমার সৈন্যবাহিনীকে ক্ষমতা দিতেন! সিফফীনের যুদ্ধে ঘটনাক্রমে আমি তার সামনা সামনি চলে আসলাম। সে একটি বর্ম পরিহিত ছিল। তবে, তার বর্মের একস্থানে আমি একটি ফাঁকা জায়গা দেখতে পেলাম। কাজেই, আমি সেই স্থানে তাকে আঘাত করলাম এবং তাকে মেরে ফেললাম। কিন্তু, পরে আমি জানতে পারলাম যে তিনি ছিলেন আম্মার বিন ইয়াসির। অতঃপর, আবুল গাদিয়াহ নিজেকে বললেন: আমার এক হাত রুপার পাত্র থেকে পানি পান করতে অপছন্দ করে, যার অপর হাত 'আম্মার বিন ইয়াসিরকে হত্যা করেছে। মুসনাদে আহমাদের বর্ণনায়: মুহাম্মাদ বিন আমর বর্ণনা করেন: যখন আম্মার বিন ইয়াসির কে হত্যা করা হয়, আমর বিন হাযম সোজা চলে যান। আমর বিন আসের নিকট এবং তাকে অবহিত করেন যে, “আম্মার কতল হয়েছেন এবং আল্লাহর রসুল বলেছেন: “একটি বিদ্রোহী দল তাঁকে হত্যা করবে”। একথা শুনে আমর বিন আস আতঙ্কিত হয়ে গেলেন এবং দ্রুত মু'আবিয়াহ র নিকট চলে আসলেন এবং বারবার বলতে লাগলেন, 'নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহরই এবং তারই নিকট আমাদের ফিরে যেতে হবে। মু'আবিয়াহ জিজ্ঞাসা করলেন, “কী হয়েছে?"। আমর বিন 'আস উত্তরে বললেন: 'আম্মার বিন ইয়াসির কে হত্যা করা হয়েছে। মুআবিয়াহ জিজ্ঞাসা করলেন: " আম্মার হত্যা হয়েছে তো তুমি এমন কেন করছ?” একথা শুনে আমর বিন আস জানান: আমি আল্লাহর রসুলকে বলতে শুনেছি: “ “আম্মারকে একটি বিদ্রোহী দল হত্যা করবে”। মুআবিয়াহ বললেন: “তোমরা নিজেদের প্রশাবে নিজেরাই পিছলে পড়। আমরা কি 'আম্মারকে হত্যা করেছি? তাকে তো 'আলী ইবনু আবী তালিব ও তার সঙ্গীরা আমাদের সামনে নিয়ে এসেছে"। মুসনাদ আহমাদের অপর বর্ণনায় এবং মুসতাদরাক লিল হাকিম এর বর্ণনায়: যখন আমর বিন আসকে আম্মার বিন ইয়াসিরের হত্যার খবর সম্পর্কে অবহিত করা হল, তিনি বললেন, আমি আল্লাহর রসুলকে বলতে শুনেছি: “তাঁর হত্যাকারী এবং তার বন্টনের হকদার জাহান্নামে যাবে”। জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল: “আপনিও তো ওই দলের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, তাই না?”। তখন আমর বিন 'আস উত্তর দিলেন: “আল্লাহর রসুল কেবলমাত্র হত্যাকারী এবং গনীমত ভক্ষণকারীর কথা বলেছেন"। [মুসনাদ
আহমাদ ১৬৭৪৪ (৪র্থ খন্ড, পৃষ্ঠা ৭৬) শায়খ যুবায়ের ও শুআইব সনদটিকে সহীহ বলেছেন। মুসনাদ আহমাদ ১৭৮১৩ ( ৪র্থ খন্ড, পৃষ্ঠা ১৯৯) এবং ১৭৮১১ ( ৪র্থ খন্ড, পৃষ্ঠা ১৯৮ ) শুআইব আরনাউত সনদটিকে সহীহ বলেছেন। মুসতাদরাক লিল হাকিম ৫৬৬১, ইমাম হাকিম ও যাহাবী বলেছেন: সনদটি বুখারী মুসলিমের শর্তানুযায়ী সহীহ। সিলসিলা সহীহাহ ২০০৮]
৪)ইবনু শামাসাহ্ আল মাহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ আমরা 'আমর ইবনু 'আস (রাঃ)-কে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে দেখতে উপস্থিত হলাম। তখন তিনি দেয়ালের দিকে মুখ করে অনেকক্ষণ কাঁদছিলেন। তাঁর পুত্র তাঁকে তাঁর সম্পর্কে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রদত্ত বিভিন্ন সুসংবাদের উল্লেখ পূর্বক সান্ত্বনা দিচ্ছে যে, আব্বা! রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি আপনাকে অমুক সুসংবাদ দেননি? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি আপনাকে অমুক সুসংবাদ দেননি? রাবী বলেন, তখন তিনি পুত্রের দিকে মুখ ফিরালেন এবং বললেন, আমার সর্বোৎকৃষ্ট পাথেয় হচ্ছে “লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু মুহাম্মাদুর রসূলুল্ল-হ" এ
কালিমার সাক্ষ্য দেয়া। আর আমি অতিক্রম করেছি আমার জীবনের তিনটি পর্যায়। এক সময় তো আমি এমন ছিলাম যে, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিরুদ্ধাচরণে আমার চেয়ে কঠোরতর আর কেউই ছিল না। সে সময়ে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কব্জায় পেয়ে হত্যা করা ছিল আমার সবচাইতে প্রিয় ভাবনা। যদি সে অবস্থায় আমার মৃত্যু হত তবে নিশ্চিত আমাকে জাহান্নামে যেতে হত। এরপর আল্লাহ যখন আমার অন্তরে ইসলামের অনুরাগ সৃষ্টি করে দিলেন, তখন আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে অনুরোধ জানালাম যে, আপনার ডান হাত বাড়িয়ে দিন, আমি বাই'আত করতে চাই। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ডান হাত বাড়িয়ে দিলেন, তখন আমি আমার হাত টেনে নিলাম। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, 'আমর, কী ব্যাপার? বললাম, পূর্বে আমি শর্ত করে নিতে চাই। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, কী শর্ত করবে? আমি উত্তর করলাম, আল্লাহ যেন আমার সব গুনাহ মাফ করে দেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, 'আমর! তুমি কি জান না যে, ইসলাম পূর্ববর্তী সকল অন্যায় মিটিয়ে দেয়। আর হিজরত পূর্ববর্তী সকল অন্যায় মিটিয়ে দেয়? আর হাজ্জ পূর্ববর্তী সকল অন্যায় মিটিয়ে দেয়? আমর বলেন, এ পর্যায়ে আমার অন্তরে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অপেক্ষা বেশি প্রিয় আর কেউ ছিল না। আমার চোখে তিনি অপেক্ষা মহান আর কেউ নেই। অপরিসীম শ্রদ্ধার কারণে আমি তাঁর প্রতি চোখভরে তাকাতেও পারতাম না। আজ যদি আমাকে তাঁর দৈহিক আকৃতির বর্ণনা করতে বলা হয় তবে আমার পক্ষে তা সম্ভব নয়। কারণ চোখ ভরে আমি কখনই তাঁর প্রতি তাকাতে পারিনি। ঐ অবস্থায় যদি আমার মৃত্যু হত তবে অবশ্যই আমি জান্নাতী হওয়ার আশাবাদী থাকতাম। পরবর্তীকালে আমরা নানা বিষয়ের সাথে জড়িয়ে পড়েছি, তাই জানি না, এতে আমার অবস্থান কোথায়? সুতরাং আমি যখন মারা যাব, তখন যেন কোন বিলাপকারিণী অথবা আগুন সে জানাযার সাথে না থাকে। আমাকে যখন দাফন করবে তখন আমার উপর আস্তে আস্তে মাটি ফেলবে এবং দাফন সেরে একটি উট যাবাহ করে তার গোশত বণ্টন করতে যে সময় লাগে ততক্ষণ আমার কবরের পাশে অবস্থান করবে। যেন তোমাদের উপস্থিতির কারণে আমি আতঙ্ক মুক্ত অবস্থায় থাকি ও চিন্তা করতে পারি যে, আমার প্রতিপালকের দূতের কি জবাব দিব। মুসনাদ আহমাদের বর্ণনায়: যখন আমর বিন 'আস মৃত্যুমুখে পতিত, তিনি কাঁদতে শুরু করলেন। তার পুত্র আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আস জিজ্ঞাসা করেন: "আপনি কি মৃত্যুর ভয়ে কাঁদছেন?"। তিনি উত্তর করলেন: “না। বরং, আমি তার পরের চিন্তা করছি”। তার পুত্র বললেন: আপনি তো হকের ওপর বিদ্যমান ছিলেন এবং আপনি তো আল্লাহর রসুলের সাহাবী হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন এবং আপনি তো শামের বিজয়েরও ভাগীদার। আমর বিন 'আস বলেন: তুমি তো এগুলোর চেয়ে বড় আমলের কথাই বর্ণনা করলে না। আর সেটি হল: মহান আল্লাহ ছাড়া কোনও সত্য উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রসুল - এর সাক্ষ দেয়া। আমি জীবনে তিনটি বড় ধাপ অতিক্রম করেছি এবং আমি আমার প্রত্যেক ধাপের অবস্থা সম্পর্কে অবহিত। শুরুতে আমি একজন কাফের ছিলাম এবং আল্লাহর রসুলের সবচেয়ে বড় শত্রু ছিলাম। এমতাবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে আমি অবশ্যই জাহান্নামে যেতাম। অতঃপর আমি যখন তার নিকট ইসলামের ওপর বায়আত করলাম, আমি তাকে সবচাইতে বেশি সম্মান করতে লাগলাম। তাকে আমি এত বেশি সম্মান করতাম যে, আমি তার দিকে কখনও চোখ তুলেও তাকাই নি,
এমনকি তার দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়ার আগ পর্যন্ত কোনও বিষয়ে আলোচনাও করিনি। এমতাবস্থায় আমার মৃত্যু হলে লোকে বলত: সুসংবাদ আমরের জন্য, যে ইসলাম কবুল করেছে, তার ওপর অটল থেকে মৃত্যুবরণ করেছে। কাজেই আমরা আশা রাখি, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। অতঃপর, এল রাজতন্ত্র এবং এ অবস্থায় আমি এমন সব কাজ সম্পাদন করেছি যে আমি নিজেও জানি না যে সেগুলো ঠিক না ভুল। আজ আমি মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে, কোনও আহাজারীকারী অথবা আগুন সে জানাযার সাথে না থাকে। আমার কাফন শক্ত করে বাঁধবে, কেননা আমার সাথে তর্ক করা হবে আর আমাকে ধীরে ধীরে মাটিতে রাখবে, কেননা আমার ডানপাশ, বামপাশের চেয়ে জমিনের বেশি হক্বদার নয়। আমার কবরে কোনও কাঠ অথবা পাথর রাখবে না। দাফন সেরে একটি উট যাবাহ করে তার গোশত বণ্টন করতে যে সময় লাগে ততক্ষণ আমার কবরের পাশে অবস্থান। করবে, যেন তোমাদের উপস্থিতির কারণে আমি খানিকটা স্বস্তি পাই। .... [সহীহ মুসলিম ৩২১, মুসনাদ আহমাদ ১৭৮১৫, ১৭৮১৬ (৪র্থ খন্ড, পৃষ্ঠা ১৯৯), ৬৯২৯ (২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ২০৬)। শায়খ শু'আইব আরনাউত সনদকে সহীহ বলেছেন ]
৫) 'আবদুর রহমান (রাঃ) বর্ণনা করেন, আমি 'আলী ইবনু আবী তালিব এর সাথে ফজরের সলাত আদায় করছিলাম এবং তিনি কুনুতে নাযেলাতে পড়লেন: “হে আল্লাহ, আপনি নিজেই মু'আবিয়া ও তার সঙ্গীদের, আমর বিন আস ও তার সঙ্গীদের এবং আবু সালমা ও তার সঙ্গীদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিন”। মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বার অপর বর্ণনায়: ইয়াযীদ বিন আসসাম বর্ণনা করেন যে, যখন 'আলী ইবনু আবী তালিবকে সিফফীনের নিহতদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হল, তিনি বললেন: আমার ও তার নিহতরা জান্নাতে যাবে এবং মু'আবিয়া ও আমার মধ্যে সেদিন ফয়সালা হবে। [মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা ৭০৫০, শায়খ যুবায়ের তার মাকালাত-৬ এ সনদটিকে সহীহ বলেছেন। মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা ৩৭৮৮০, শায়খ ইরশাদুল হক্ব আছারী সনদটিকে সহীহ বলেছেন]
৬)আবু সাঈদ খুদরী বর্ণনা করেন, আমরা রসুলুল্লাহ র অপেক্ষায় বসে ছিলাম, তখন তিনি তার এক স্ত্রীর বাসা থেকে বের হয়ে আমাদের কাছে আসলেন এবং আমরাও তার সঙ্গ দিলাম। ইতিমধ্যে, তার জুতা ছিড়ে গেল এবং আলী সেই জুতা মেরামতের কারণে আমাদের সঙ্গ দিতে পারলেন না আর আমরা আল্লাহর নবীর সাথে হাঁটা শুরু করলাম। হঠাৎ, তিনি আমাদের আলীর জন্য অপেক্ষা করতে বললেন এবং আমরা থেকে গেলাম। তিনি বললেন, "তোমাদের মধ্যে একজন ব্যক্তি আছে, যে কিনা যুদ্ধ করবে কুরআনের তাফসীরের জন্য, যেমনভাবে আমি যুদ্ধ করেছি কুরআনের অবতরণের জন্য। ” একথা শুনে আমরা তার দিকে আগ্রহের সাথে তাকালাম এবং আবু বাকার ও 'উমারও সেই সময় উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু, তিনি বললেন, “না, বরং ওই ব্যক্তি হল সেই, যে আমার জুতা মেরামত করছে। একথা শুনে আমরা সবাই "আলী ইবনু আবী তালিবের কাছে আসলাম তাকে এই সুসংবাদ দেয়ার জন্য। আবু সাঈদ খুদরী বলেন, “আলী ইবনু আবী তালিব এর আচরণ এই নিদর্শনই দিচ্ছিল যে, তিনি এই সুসংবাদ আগে থেকেই জানতেন"। [মুসনাদ আহমাদ ১১৭৯০ ( ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৮২ ), শায়খ শুআইব আরনাউৎ বলেন, এর সনদ সহীহ। সুনানুল কুবরা ৮৪৫৭, শায়খ গোলাম মোস্তফা জহির বলেন, এর সনদ সহীহ]
__________________________
সিফফিনের যুদ্ধের ব্যাপারে আহলে সুন্নাহর বিজ্ঞ আলেমদের মতামত:-
১) ইবনে হাযার বলেন, 'এই হাদীসটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইতি ওয়া সাল্লামের নবুওয়াতের একটি নিদর্শন এবং এতে আলী রাদিয়াল্লাহ আনহু ও আম্মার রাযিয়াল্লাহু আনহুর মর্যাদা বর্ণিত হয়েছে। এতে নাসিবিদের দাবিও প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে, যারা বলে এ যুদ্ধে আলী রাযিয়াল্লাহু আনহু সত্যের উপর ছিলেন না। তিনি আরও বলেন, 'এই হাদীসে বলা হয়েছে, আম্মারকে বিদ্রোহীদল হত্যা করবে। এখানে আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু ওই যুদ্ধে সত্যের উপর ছিলেন, কারণ তাকে মুআবিয়া রাধিয়াল্লাহ আনহুর সঙ্গীরাই হত্যা করেছিল।ফাতহুল বারী, ১/৬৪৬।
২) নববী রহ. বলেন, 'সিফফীনের যুদ্ধে সাহাবীরা আমার রাশিয়াল্লাহু আনহুকে অনুসরণ করেছেন। তিনি যেখানে গিয়েছেন, তারাও সেখানে হাজির হয়েছেন। কারণ, তারা এই হাদীস থেকে নিশ্চিত ছিলেন, আম্মার রাযিয়াল্লাহু আনহু যে দলের সঙ্গে থাকবেন, তারা সত্যের উপর থাকবে। প্রাগুক্ত, ১৩/৯২।
৩)ইবনে কাসির বলেন, 'আলী রাযিয়াল্লাহু আনহু ও তার সঙ্গীরা মুআবিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহু ও তার সঙ্গীদের থেকে সত্যের নিকটবর্তী ছিলেন এবং মুআবিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহুর সঙ্গীরা তাদের ব্যাপারে বাড়াবাড়িতে লিপ্ত ছিল। সহীহ মুসলিম থেকে এটি প্রমাণিত, আবু সাঈদ খুদরী রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমার চেয়ে উত্তম এক ব্যক্তি অর্থাৎ আবু কাতাদা আমাকে বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আম্মার রাযিয়াল্লাহু আনহুকে বলেছেন, 'বিদ্রোহীদল তোমাকে হত্যা করবে। তিনি আরও বলেন, 'এখানে আমরা দেখতে পাই, আম্মার ইবনে ইয়াসির রাযিয়াল্লাহু আনহু আমীরুল মুমিনীন আলী রাযিয়াল্লাহু আনহুর পক্ষে লড়াই করছিলেন এবং সিরিয়া বাহিনীর লোকেরা তাকে হত্যা করে। হাদীসের অন্তর্নিহিত অর্থ এটিই যে, তাকে
যারা হত্যা করবে, তারা বিদ্রোহীদল বা তারা সত্যের উপর নেই। এভাবে যাটি নিশ্চিত যে, আলী রাযিয়াল্লাহু আনহু সঠিক ও সত্য পথের উপর ছিলেন এবং মুআবিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহু সঠিক ছিলেন না। এটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুওয়াতের একটি নিদর্শন।( তাহযাব আল-আসমা ওয়াল-লুগাত, ২/৩৮। **)
৪) যাহাবি বলেন, 'তারা ছিল মুসলিমদের একটি দল যারা আলী রাযিয়াল্লাহু আনহুর ব্যাপারে বাড়াবাড়িতে লিপ্ত ছিল। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আম্মার রাযিয়াল্লাহু আনহুকে বলেছেন, 'তোমাকে বিদ্রোহীদের একটি দল হত্যা করবে।( সিয়ার আলম আন-নুবালা, ৮/২০৯।)
৫। আল-কাদি আবু বকর ইবনে আল-আরাবি বলেন, কুরআনের এই আয়াতটি: মুমিনদের দুই দল দ্বন্দ্বে লিপ্ত হলে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেবে; অতঃপর তাদের একদল অপর দলকে আক্রমণ করলে আক্রমণকারী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, যতক্ষণ না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। (সূরা হুজুরাত, ৪৯:৯) মুসলমানদের দুই দলের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধের ক্ষেত্রে দিকনির্দেশনা প্রদান করে। আর এটি তাদের জন্য প্রযোজ্য, যারা এর অপব্যাখ্যা করে আরেক দলকে বাড়াবাড়িতে লিপ্ত মনে করে। সাহাবায়ে কেরাম এই আয়াতের দিকে ইশারা করেছেন এবং এ উম্মতের প্রসিদ্ধ ব্যক্তিগণও এই আয়াতের দিকে ঝুঁকেছেন। এটাই, যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আম্মার রাযিয়াল্লাহু আনহুকে বলেছেন, 'তোমাকে বিদ্রোহীদের একটি দল হত্যা করবে।
(আহকামুল কুরআন, ৪/১৭১৭।)
৬)সাঈদ হাওয়া বলেন, 'আম্মার রাযিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনায় যেমন বলা হয়েছে যে, তিনি বিদ্রোহীদের হাতে নিহত হবেন-নিহত হয়েছেন। এতে বিষয়টি তাদের সামনে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে, যারা আলী রাযিয়াল্লাহু আনহু সত্যের উপর রয়েছেন এবং তার পক্ষে যুদ্ধ করা জরুরি কি না, এ ব্যাপারে দ্বিধান্বিত ছিলেন। এজন্য আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযিয়াল্লাহু আনহু নিজেকে (আলী রাযিয়াল্লাহু আনহুর পক্ষে) যুদ্ধ করা থেকে বিরত রাখার জন্য আফসোস করেছেন এবং তিনি এ কারণে দুঃখ প্রকাশ করেছেন যে, তিনি তার দায়িত্বে অবহেলা করেছেন। আর এ দায়িত্ব ছিল, কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই যারা সত্যের উপর অবিচল নেতার প্রতি বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো- ফকীহদেরও একই মত।(আল-আসাস ফিস-সুন্নাহ, ৪/১৭১০।)

Comments

Popular posts from this blog

আজকের বিষয়:- খারেজ্বীদের উৎপত্তি এবং এর অন্তিম পরিণতি হযরত আলী(রা:) কে হত্যা

আহলে বায়াতের মর্যাদা